ফরাসি প্রেসিডেন্টের ফোনেও পেগাসাসের হানা
ইসরাইলি স্পাইওয়্যার পেগাসাসকাণ্ডে হ্যাকিংয়ের শিকার ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর ফোনও। একের পর বিশ্ব নেতার নাম আসায় উদ্বেগ জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
এদিকে, এ ঘটনায় রাহুল গান্ধিসহ ভারতের অন্তত ৩০০ জনের নাম আসায়, দেশজুড়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। আন্দোলনে নেমেছেন বিরোধী নেতারা। তারা অভিযোগ করেছেন মোদি সরকারের নির্দেশেই এমনটি করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরো অনেক বিশ্বনেতার নাম জড়াতে পারে।
বিশ্বজুড়ে নজরদারির শিকার হয়েছেন মানবাধিকার কর্মী, রাজনীতিক, সাংবাদিক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। লোকজনের ওপর গোপনে নজরদারি করতে ইসরাইলের একটি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন দেশের সরকারের কাছে একটি স্পাইওয়্যার বিক্রি করেছে। এই স্পাইওয়্যার দিয়েই ৫০ হাজার ফোনের ওপর গোপনে নজরদারি চালানো হয়। এবার এই তালিকায় যুক্ত হলো, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর নাম। তিনি এর লক্ষ্যবস্তু ছিলেন বলে জানা গেছে। যা নিয়ে নতুন করে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
এরই মধ্যে পেগাসাস নিয়ে চিন্তিত ইউরোপীয় কমিশন। সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট জানান, তারা যেটুকু পড়েছেন, তা যদি সত্যি হয় তবে সেটি একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। ২০১৯ সাল থেকে ১৭টি দেশের সংবাদমাধ্যম মিলে ‘দ্য পেগাসাস প্রজেক্ট’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে ইসরাইলি স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে ফোনে নজরদারির বিষয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে। সেই অনুসন্ধানেই উঠে এসেছে বিশ্বজুড়ে ৫০ হাজার ফোন হ্যাক করে সেগুলোতে নজরদারি চালানোর বিষয়টি।
এই তালিকা ও এ সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদনটি সারাবিশ্বের কিছু প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। লন্ডনের দ্য গার্ডিয়ানসহ ১৬টি সংবাদমাধ্যম একযোগে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তবে পূর্ণাঙ্গ তালিকাটি এখনও সামনে আসেনি।
ম্যালওয়্যারটির বিক্রেতা ইসরাইলি প্রতিষ্ঠান এনএসও এর দাবি, এই হ্যাকিংয়ের সঙ্গে তারা যুক্ত নয়। বরং মানবাধিকার রেকর্ড ভালো এমন দেশের সামরিক বাহিনী, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও গোয়েন্দা বিভাগের কাছে তারা এই সফটওয়্যার বিক্রি করেছে।
ভারতের নিউজ পোর্টাল দ্য ওয়্যার এই হ্যাকিংয়ের তালিকায় সে দেশের অন্তত ৩০০ রাজনীতিক, সাংবাদিক, অধিকার কর্মী, বিজ্ঞানীর নাম রয়েছে বলে জানিয়েছে। এ তালিকায় নাম এসেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ভারতীয় কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধীর। যা নিয়ে ভারতজুড়ে এখন বিক্ষোভ প্রতিবাদ চলছে।
যদিও সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তারা অর্থাৎ প্রশাসন কিংবা ভারতীয় জনতা পার্টি এর সঙ্গে জড়িত নয়।