আরো...

সুনামগঞ্জে শাল্লা উপজেলায় হিন্দু বাড়িঘরে লুটপাট, মন্দির ভাংচুর ও নির্যাতনের প্রতিবাদে দোষীদের বিচারের দাবিতে হিন্দু মহাজোটের মানব বন্ধন

রনজিত কুমার পাল (বাবু) স্টাফ রিপোর্টারঃ

সুনামগঞ্জে শাল্লা উপজেলায় হিন্দু বাড়িঘরে লুটপাট, মন্দির ভাংচুর ও নির্যাতনের প্রতিবাদে দোষীদের বিচারের দাবিতে হিন্দু মহাজোটের মানব বন্ধন

বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নয়াগাঁও হিন্দুদের ৮৮টি হিন্দু বাড়ীঘর ৮টি মন্দিরে হামলা লুটপাট এর প্রতিবাদে শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) সকাল ১০.০০ টায় ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাব এর সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচীর পালন করে।

হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডঃ দ্বীনবন্ধু রায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বরিষ্ট সহ সভাপতি প্রদীপ পাল, অ্যাডঃ প্রদীপ সরকার, মহাসচিব অ্যাডঃ গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, যুগ্ম মহাসচিব নকুল কুমার মন্ডল, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডঃ প্রতীভা বাকচী, আর্ন্তজাতিক বিষয়ক সম্পাদক নরেশ হালদার,প্রকাশনা সাগরিকা মন্ডল, যুব বিষয়ক সম্পাদক কিশোর বর্মন, হিন্দু স্বেচ্ছাসেবক মহাজোটের সভাপতি অ্যাডভোকেট গৌরাঙ্গ মন্ডল, সাংগঠণিক সম্পাদক তুলন পাল, ঢাকা মহানগর দক্ষিন এর সভাপতি ডি.কে সমির, নির্বাহী সভাপতি অখিল বিশ্বাস, সাংগঠণিক সম্পাদক নিপুন পাল, হিন্দু যুব মহাজোটের যুগ্ম আহ্বায়ক প্রদীপ শঙ্কর, গৌতম সরকার অপু, প্রশান্ত হালদার, ছাত্র মহাজোটের সভাপতি সাজেন কৃষ্ণ বল, প্রধান সমন্বয়কারী ধ্রুব বাড়–রী, রণি রাজবংশী, মলয় কুমার, বাপ্পী মজুমদার প্রমূখ।
বক্তাগণ বলেন মাওলানা মামুনুল হকের উস্কানীমূলক বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ঝুমন কুমার নামের আইডি থেকে “মামুনুল হক হিন্দু এবং মুসলিমদের মাঝে দাঙ্গা লাগাতে চাচ্ছে … এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া উচিত।” এরকম একটি পোষ্টের কারণে গত ১৭/০৩/২০২১ ইং তারিখ সকাল ৯ টায় টায় শত শত সন্ত্রাসী সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে লাঠী সোটা নিয়ে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নয়াগাও গ্রামে ৮৮টি বাড়ী ও ৮টি মন্দির ভাংচুর ও ব্যাপক লুটপাট করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। সন্ত্রাসীরা বাড়ী বাড়ী ঢুকে ঘরবাড়ী তছনছ করে, টাকা পয়সা স্বর্ণালঙ্কার লুট করে, এমনকি রান্না ঘরের হাড়ি পাতিল ভেঙ্গে নষ্ট করে। মন্দির ও প্রতিমা ভাংচুর করে।

হিন্দু মহাজোটের একটি টীম ঘটনাস্থল পরিদর্শনে ভিকটিমদের কাছ থেকে বর্ণনা শুনে ঘটনার ভয়াবহতায় বাকরুদ্ধ ও হতভম্ব হয়ে পরেন। ঘটনার সময় ভয়ে লোকজন গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায়। সন্ত্রাসীরা বাড়ী বাড়ী গিয়ে মহিলাদের শ্লীলতাহানী করে। স্বর্ণালঙ্কার, কষ্ঠি পাথরের মুর্তি সহ বহু মূল্যবান জিনিস লুঠ হয়। মাইকে ঘোষণার সময়ও পুলিশ নির্বিকার ভুমিকা পালন করে।

এতবড় একটি ঘটনা অথচ পুলিশ এখনো পর্যন্ত সকল আসাদের গ্রেফতার করে নাই। এই ঘটনায় দেশের সর্বত্রই হিন্দু সম্প্রদায় আতঙ্কে দিন যাপন করছে। সরকার মৌলবাদীদের প্রশ্রয় দিয়ে হিন্দুদের ভয় ভীতি দেখিয়ে দেশত্যাগে বাধ্য করে দেশকে হিন্দু শুন্য করে ইসলামী রাষ্ট্র করতে চায়। যে কারনে গত ১৫ বছরে হিন্দু নির্যাতনের কারনে কাউকে শাস্তিবিধান করা হয় নাই।

ইতোপূর্বে চট্টগ্রামের রাউজান ফটিকছড়ি, কক্সবাজারের রামু, নাসির নগর, কুমিল্লা যশোরের অভয়নগর সহ একের পর এক ঘটনা ঘটছে। কিন্তু কোন ঘটনারই সরকার বিচার করে নাই। এত কিছুর পরও জাতীয় সংসদ নিরব ভূমিকা পালন করছে। সেকারনে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধে জাতীয় সংসদে হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যাবস্থা পূন প্রতিষ্ঠা ও সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রনালয় প্রতিষ্ঠার দাবী জানান।

বক্তাগণ সুনামগঞ্জের ভিকটিমদের ক্ষতিপুরন, হামলাকারী, অগ্নিসংযোগকারী ও লুঠপাঠকারী সকল আসামীদের গ্রেফতার করে মানবতা বিরোধী অপরাধ ট্রাইবুনালে বিচার এবং সকল ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপুরনের দাবী জানান।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button