নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ মধ্যরাত থেকে ইলিশ ধরা শুরু
ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হবে আজ সোমবার (২৫ অক্টোবর) মধ্যরাতে। রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে পুনরায় ইলিশ ধরা শুরু করবেন জেলেরা।
ইলিশ সম্পদ সংরক্ষণে ‘প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিশ অ্যাক্ট, ১৯৫০’ এর অধীন প্রণীত ‘প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিশ রুলস, ১৯৮৫’ অনুযায়ী চলতি বছর ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর মধ্যরাত পর্যন্ত মোট ২২ দিন সারাদেশে ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুত, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ করে গত ২৬ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. ইফতেখার হোসেন বলেন, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে গত ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর মধ্যরাত পর্যন্ত সারাদেশে ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুত, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। আজ মধ্যরাতে সেই নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে। এরপর ইলিশ ধরায় কোনো বাধা থাকবে না।
২০২১-২২ অর্থবছরে সরকারের মানবিক খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির আওতায় ৩৭ জেলার ১৫১টি উপজেলায় মা ইলিশ আহরণে বিরত থাকা ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৯৪৪টি জেলে পরিবারের জন্য এ বরাদ্দ দেওয়া হয়। গত বছরের চেয়ে বেশি ২৭ হাজার ৬০২টি জেলে পরিবারকে এবার বরাদ্দের আওতায় আনা হয়েছে। এর আওতায় প্রতিটি জেলে পরিবার ২০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরুর আগেই এ বছর ভিজিএফের চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়।
এরই মধ্যে নৌকা ও মাছ ধরার সরঞ্জাম নিয়ে নদীতীরে ভিড়তে শুরু করেছেন জেলেরা। আনন্দ-উচ্ছ্বাসে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। তবে নিষেধাজ্ঞা হতে শেষ হতে চললেও এখনো প্রণোদনা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন অনেক জেলে।
দোহারের পদ্মা নদীতে কেউ কেউ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলেও বেশিরভাগই ইলিশ ধরা থেকে বিরত থেকেছেন। নিষেধাজ্ঞাকালে জাল ও নৌকা মেরামত করেই কাটিয়েছেন তারা। তবে রোজগার না থাকায় দিনগুলো কেটেছে অর্থকষ্টে। বহু জেলে পাননি সরকারি প্রণোদনার চাল। তাই সংসার চালাতে ধার-দেনাও করতে হয়েছে।
জেলেরা জানিয়েছেন, অনেকেই প্রণোদনার চাল কম পেয়েছেন। ২০ কেজির স্থলে পেয়েছেন ১৫ কেজি করে। চাল কম পাওয়ায় অসন্তুষ্ট তারা।
জেলেরা জানান, ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে বা আগেই প্রণোদনার চাল পেলে উপকার হতো। কিন্তু চাল দেওয়া হয়েছে নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার দুই দিন আগে।
ঢাকা জেলার মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুনুর রশীদ বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করা জেলের সংখ্যা কম। তাই রক্ষা পেয়েছে মা ইলিশ। এবার ইলিশ উৎপাদন বাড়বে আশা করা যাচ্ছে।
এ বছর ইলিশের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৩৩ হাজার টন। জেলেরা আশা করছেন, নিষেধাজ্ঞা শেষে আশানুরূপ ইলিশ পেলে তাদের অর্থকষ্ট ঘুচবে, ঋণ শোধ করে সংসারের ফিরবে সচ্ছলতা।