হিরোশিমার ৭৬ বছর আজ
আজ জাপানের হিরোশিমায় পারমাণবিক বোমা হামলার ৭৬ বছর। মানব ইতিহাসের কলঙ্কতম এক অধ্যায়ের নাম। জাপানের এই নগরীতেই ফাটানো হয় প্রথম পারমাণবিক বোমা ‘লিটল বয়’। যুক্তরাষ্ট্রের সেই আক্রমণে প্রাণ গিয়েছিল লক্ষাধিক মানুষের, আহত লাখ লাখ।
১৯৪৫ সালের এই দিনে হিরোশিমায় যুক্তরাষ্ট্রের ওই বোমা হামলায় ১ লাখ ৪০ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারান। ভয়াবহ ওই দিনটি স্মরণে বৃহস্পতিবার সকালে হিরোশিমার পিস মেমোরিয়াল পার্কে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। নিহতদের স্মরণে পালিত হয় এক মিনিটের নিরবতা। করোনা মহামারির কারণে সামাজিক দূরত্ব মেনে ও মাস্ক পরে অনুষ্ঠানে অংশ নেন এক হাজার মানুষ। খবর বিবিসি ও আলজাজিরা।
হিরোশিমায় হামলার ৭৫ বছর পূর্তিতে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিনটি স্মরণ করছে জাপান। তবে করোনার কারণে এবার হিরোশিমা পিস মেমোরিয়াল পার্কে জনসমাগমে অনুমতি দেওয়া হয়নি। দিবসের সব আয়োজন অনলাইনে সম্প্রচার করা হচ্ছে। মেমোরিয়াল পার্কে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া, আহত, নিহতদের আত্মীয়স্বজন মিলে এক হাজার মানুষ, সবাই ছিলেন মাস্ক পরিহিত।
পারমাণবিক বোমা হামলার ঠিক সময় সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ও হিরোশিমার মেয়র কাজুমি মাতসুইর নেতৃত্বে এক মিনিটের নিরবতা পালন করেন। পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধে বিশ্ব নেতাদের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বলেন, পরমাণু অস্ত্রহীন বিশ্ব তৈরিতে নেতৃত্ব দেবে জাপান।
হিরোশিমার মেয়র কাজুমি অতি জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, এমন দুঃসহ অতীতের পুনরাবৃত্তি আমরা হতে দিতে পারি না। সভ্য সমাজকে অবশ্যই আত্মকেন্দ্রিক জাতীয়তাবাদিতা পরিত্যাগ করতে হবে এবং সকল হুমকির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
হিরোশিমা দিবস উপলক্ষে ভিডিও বার্তায় জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, পারমাণবিক ঝুঁকি একেবারে দূর করার একমাত্র উপায় পারমাণবিক অস্ত্র পুরোপুরি বিলুপ্ত করা।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট জাপানের হিরোশিমা নগরীতে ফেলা হয় প্রথম পারমাণবিক বোমা ‘লিটল বয়’। যুক্তরাষ্ট্রের ওই বোমা হামলায় মৃত্যু হয়েছিল প্রায় ১ লাখ ৪০ লাখ মানুষের। হিরোশিমার শোকের তিন দিন পর আবার নাগাসাকিতে আরও একটি পারমাণবিক বোমা ফেলে যুক্তরাষ্ট্র। ‘ফ্যাট ম্যান’ নামে ওই বোমার আঘাতে মৃত্যু হয় আরও ৭৪ হাজার মানুষের। যুক্তরাষ্ট্রের জোড়া পারমাণবিক বোমা হামলার পরই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আত্মসমর্পণ করে জাপান।