চট্টগ্রামে টিকার সুরক্ষা অ্যাপ ‘হ্যাক’ করে ভুয়া এসএমএস!
চট্টগ্রাম মেডিকেলে প্রতিদিনই কিছু কিছু টিকাগ্রহীতা এসএমএস নিয়ে আসছেন। যার সঙ্গে ওয়েবসাইটের কোনো মিল নেই। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থানায় সাধারণ ডায়েরি করে।
হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষের ধারণা চট্টগ্রামে কোভিড টিকার জন্য নিবন্ধনের ওয়েবসাইট ‘সুরক্ষা’ হ্যাক করে সার্ভারে প্রবেশ করে কোনো চক্র এ ঘটনা ঘটাচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) দুপুরে ওয়েবসাইট হ্যাকের অভিযোগ করে চমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আফতাব উদ্দিন নগরীর পাঁচলাইশ থানায় জিডি করেন। জিডি নম্বর ১২৬০।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবীর এ বিষয়ে বলেন, চমেক হাসপাতালের টিকাকেন্দ্রে প্রতিদিন ৫-১০ জন অতিরিক্ত লোক টিকা দিতে আসছেন, যাদের মোবাইলে এসএমএস গেছে। কিন্তু সেই তারিখের সঙ্গে সুরক্ষা অ্যাপের মিল নেই। বিষয়টি নজরে আসার পর সন্দেহ হয় যে সাইটটি কেউ হ্যাক করে সার্ভারে ঢুকে অবৈধভাবে তারিখগুলো পাঠাচ্ছেন। এরপর চমেক হাসপাতালের পক্ষ থেকে জিডি করেছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। আগামীকাল বুধবার (২৯ জুলাই) এরকম এসএমএস গ্রহীতাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
চমেক হাসপাতালের টিকাদান কেন্দ্রের কর্মকর্তারা বলছেন, দ্বিতীয় দফায় গণটিকা কার্যক্রম শুরুর পর তিন শতাধিক ভুয়া এসএমএস পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নজরে আসার পর চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সার্ভারে ঢোকার পাসওয়ার্ড বদলে দিয়েছে বলে জানা গেছে প্রাথমিকভাবে।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতিদিনই কে বা কারা সুরক্ষা সাইট হ্যাক করে টিকা প্রদানের নির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ করে ভুয়া এসএমএস প্রদান করে আসছেন। ফলে টিকার নির্দিষ্ট লকের অতিরিক্ত টিকাগ্রহীতা কেন্দ্রে এসে কার্যক্রমে ব্যাঘাত সৃষ্টি করছেন। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে অনুরোধ করা হয়।
সূত্র জানিয়েছে, সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে সাধারণত তারা প্রতিদিন গড়ে এক হাজার ৫০০টি এসএমএস দিয়ে থাকেন। টিকা প্রদানের একদিন আগে গ্রহীতাকে এই এসএমএস দেওয়া হয়। কিন্তু প্রতিদিনের টিকা প্রদানের এসএমএস চেক করতে গিয়ে তারা দেখতে পান, সুনির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ করে চার থেকে পাঁচ দিন আগেও অনেককে এসএমএস দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, করোনার টিকা নিতে আগ্রহীদের নিবন্ধন করতে হয় ‘সুরক্ষা’ নামক ওয়েব পোর্টালে (www.surokkha.gov.bd)। অ্যান্ড্রয়েড বা অ্যাপল প্লে স্টোর থেকেও সুরক্ষা মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড করেও করা যায় নিবন্ধন।
এজন্য প্রয়োজন হয় জাতীয় পরিচয়পত্র এবং নাম, ঠিকানা, বয়স, পেশা, শারীরিক পরিস্থিতি, ফোন নাম্বার ইত্যাদি তথ্য। সেখানে প্রথমে নিজের পেশার ধরণ, পেশা বাছাই করার পরে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও জন্ম তারিখ দিতে হবে।
বাংলাদেশের আইসিটি বিভাগের প্রোগ্রামাররা এই ডাটাবেজটি তৈরি করেছেন। বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় এই ওয়েবসাইটে তথ্য পূরণ করা যায়। ওয়েব অ্যাপলিকেশনে নিবন্ধন করতে হলে তাদের বয়স ন্যূনতম ১৮ বছর হতে হয়।